বিড়ালের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো বিড়ালের পেট খারাপ হওয়া। এর ফলে বিড়াল খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয় যার ফলাফল খুবই ভয়াবহ। যদিও এটা কম বেশি প্রতিটা বিড়ালের ক্ষেত্রেই হওয়াটা স্বাভাবিক তবে সময় মত সঠিক চিকিৎসা না পেলে এই সাধারণ সমস্যাও হতে পারে বিড়ালের মৃত্যুর কারণ। তাই কোন ভাবে অবহেলা না করে বিড়ালের পেট খারাপ হলে করণীয় কি তা জানা উচিৎ এবং বিড়ালের মধ্যে উক্ত লক্ষণ দেখা গেলে তা যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।
যারা বিড়াল লালন পালন করে তাদের কাছে বিড়াল তাদের সন্তানের চেয়ে কম আদরের নয়, এই প্রাণীটির সামান্যতম অসুস্থতাও মন খারাপ হয়ে যায়। পেটের সমস্যা খুব সাধারণ হলেও যখন বিড়ালের এই সমস্যা হয় তখন এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠে।
তাই আজ আমরা আলোচনা করবো বিড়ালের পেট খারাপ হলে আপনি কী করবেন, কী কারণে এই সমস্যা হয়, এবং এর থেকে আপনার প্রিয় বিড়ালটিকে কিভাবে সুস্থ করে তুলবেন। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
বিড়ালের পেট খারাপ বলতে কী বোঝায়?
“বিড়ালের পেট খারাপ” – এই কথাটি শুনলেই মনে হতে পারে, এটা শুধু হজমের সমস্যা। কিন্তু আসলে বিষয়টা আরও ব্যাপক। পেট খারাপ বলতে সাধারণত নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো বোঝানো হয়:
- ডায়রিয়া: পায়খানা নরম বা তরল হওয়া, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার হওয়া।
- বমি: খাবার বা অন্য কিছু পেটের থেকে মুখ দিয়ে বের করে দেওয়া।
- কোষ্ঠকাঠিন্য: পায়খানা করতে অসুবিধা হওয়া বা কয়েকদিন ধরে পায়খানা না হওয়া।
- পেটে গ্যাস: পেটে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হওয়া, যা অস্বস্তির সৃষ্টি করে।
- পেট ফোলা: পেটে গ্যাস বা অন্য কারণে পেট স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ফুলে যাওয়া।
এবার বিড়ালের পেট খারাপের এই সমস্যা গুলোর একেক করে কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
বিড়ালের পেট খারাপ হওয়ার কারণ
প্রথমেই আসুন জেনে নেই বিড়ালের পেট খারাপ হওয়ার পেছনে কি কি কারণ থাকতে পারে। কেননা, যেহেতু সমস্যা একাধিক স্পেসিফিক ভাবে কোনটি হয়েছে তা বুঝার জন্য কারণ গুলো জানা জরুরি। নিমে কিছু সাধারণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
- খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন
বিড়ালের খাদ্য পরিবর্তন করলে অনেক সময় পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নতুন খাবারে অভ্যস্ত হতে তাদের একটু সময় লাগে। তাই হুট করে খাবার পরিবর্তন না করে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করা উচিত।
- খাদ্যজনিত অ্যালার্জি
কিছু বিড়ালের বিশেষ কিছু খাবারে অ্যালার্জি থাকতে পারে। এই অ্যালার্জি থেকে বমি, ডায়রিয়া বা পেটে গ্যাসের মতো সমস্যা হতে পারে। সাধারণভাবে গরুর দুধ, কিছু প্রিজারভেটিভ এবং আর্টিফিশিয়াল রংয়ের কারণে অ্যালার্জি হতে পারে।
- সংক্রমণ সংক্রান্ত কারণ
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা পরজীবী সংক্রমণের কারণেও বিড়ালের পেট খারাপ হতে পারে। যেমন: সালমোনেলা বা ই কোলাইয়ের মতো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটাতে পারে। আবার রোটাভাইরাস বা করোনা ভাইরাস পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে। তাছাড়া কৃমি, অ্যামিবা বা জিয়ার্ডিয়ার মতো পরজীবী পেটের সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
- বিষক্রিয়া
বিড়াল যদি কোনো বিষাক্ত জিনিস খেয়ে ফেলে, তাহলে তার পেট খারাপ হতে পারে। যেমন: কীটনাশক, বিষাক্ত গাছ, বা মানুষের ওষুধ ইত্যাদি।
- অন্যান্য রোগ
তবে আপনার বিড়ালের যদি কিডনি রোগ, লিভারের সমস্যা, প্যানক্রিয়াটাইটিস বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যার থাকে সেগুলোর কারণেও বিড়ালের পেট খারাপ হতে পারে।
বিড়ালের পেট খারাপের লক্ষণ
ঠিক কি কি কারণে বিড়ালের পেট খারাপ হতে পারে ইতিমধ্যেই সেবিষয়ে জেনে নিয়েছি। এবার আপনার বিড়ালের পেট খারাপ হয়েছে কিনা তা বোঝার উপায় জানাবো। এক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে। নিচে সমস্যার পেক্ষিতে লক্ষণ গুলো জানানো হলো। যেমন:
রোগ | লক্ষণের বর্ণনা |
ডায়রিয়া | নরম বা তরল পায়খানা, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার হওয়া। অনেক সময় পায়খানার সাথে রক্তও যেতে পারে। |
বমি | খাবার বা অন্য কিছু পেটের থেকে মুখ দিয়ে বের করে দেওয়া। বমির মধ্যে খাবার, হলুদ বা সবুজ তরল থাকতে পারে। |
ক্ষুধামন্দা | খাবার খেতে না চাওয়া বা খাবারে অনীহা। |
দুর্বলতা | দুর্বল লাগা বা ঝিমিয়ে থাকা। |
পেটে অস্বস্তি | পেটে ব্যথা বা গ্যাস হওয়ার কারণে বিড়াল ছটফট করতে পারে। |
ডিহাইড্রেশন | শরীর পানিশূন্য হয়ে যাওয়া, যা মাড়ি শুষ্ক হয়ে যাওয়া বা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়ার মাধ্যমে বোঝা যায়। |
বিড়ালের পেট খারাপ হলে করণীয়
এখন অব্দি আমরা বিড়ালের পেট খারাপ হলে তা বুঝার উপায় ও হওয়ার কারণ সম্পর্কে জেনেছি। এবার বিড়ালের পেট খারাপ হলে করণীয় কি হবে বা দ্রুত যে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সেসম্পর্কে জানাবো।
পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া
প্রথমেই একজন পশুচিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার বিড়ালের অবস্থা জানিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করুন। কোনো ওষুধ দেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
খাবার নিয়ন্ত্রণ করে খাওয়ানো
পেট খারাপ হলে বিড়ালকে ২৪ ঘণ্টার জন্য খাবার দেওয়া বন্ধ করুন। এতে তার হজম প্রক্রিয়া কিছুটা বিশ্রাম পাবে। তবে, ছোট বিড়ালছানা বা অসুস্থ বিড়ালের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় খাবার বন্ধ রাখা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা
ডায়রিয়া বা বমির কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, তাই ডিহাইড্রেশন এড়াতে বিড়ালকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাতে হবে। যদি সে নিজে থেকে পানি পান করতে না চায়, তাহলে সিরিঞ্জ দিয়ে অল্প অল্প করে পানি খাওয়ান। এক্ষেত্রে আপনি স্যালাইনও খাওয়াতে পারেন।
বিড়ালকে স্যালাইন খাওয়ানোর জন্য প্রথমে স্যালাইন তৈরি করে নিন। এক লিটার পানিতে এক চিমটি লবণ এবং তিন চামচ চিনি মিশিয়ে স্যালাইন তৈরি করতে পারেন। এরপর একটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে অল্প অল্প করে বিড়ালকে স্যালাইন খাওয়ান। খেয়াল রাখবেন, স্যালাইন যেন খুব দ্রুত না খাওয়ানো হয়, কারণ এতে বমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হালকা খাবার খাওয়ানো
২৪ ঘণ্টা পর যদি বিড়ালের অবস্থা একটু ভালো মনে হয়, তাহলে তাকে সহজে হজম হয় এমন হালকা খাবার দিন। যেমন: সেদ্ধ মুরগির মাংস (চামড়া ও হাড় ছাড়া সেদ্ধ মুরগির মাংস খুবই হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য), সেদ্ধ ডিম (ডিমের কুসুম পেটের জন্য ভালো),
তাছাড়া অল্প পরিমাণে সেদ্ধ ভাত দিতে পারেন। খাবার অল্প পরিমাণে দিন এবং দেখুন বিড়াল কীভাবে নেয়। যদি বমি বা ডায়রিয়া না হয়, তাহলে ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। এই পর্যায়ে একটা ছক দেখানো হলো যেখানে বিড়ালকে এই অবস্থায় কি খাওয়ানো যাবে আর কি খাওয়ানো যাবে না তার তালিকা দেয়া রয়েছে:
✅ যে খাবার দিতে পারেন | ❌ যে খাবার এড়িয়ে চলবেন |
সিদ্ধ মুরগির মাংস (হাড় ও চামড়া ছাড়া) | দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার |
সিদ্ধ চাল (প্লেইন রাইস) | চর্বিযুক্ত বা মশলাদার খাবার |
সেদ্ধ বা ম্যাশ করা কুমড়া | কাঁচা মাছ বা মাংস |
প্লেইন দই (Unsweetened Yogurt) | কিছু শাকসবজি ও ফলমূল (যা বিড়ালের জন্য উপযুক্ত নয়) |
হালকা চিকেন ব্রথ | শুকনো বা হার্ড কিবল (অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখতে হতে পারে) |
ORS বা ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ | মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার |
প্রোবায়োটিকস
বিড়ালের হজমক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রোবায়োটিকস খুবই উপযোগী। এটি পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে হজম প্রক্রিয়াকে সঠিক রাখতে সাহায্য করে। পশুচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রোবায়োটিকস ব্যবহার করতে পারেন।
ঘরোয়া প্রতিকার অবলম্বন
কিছু ঘরোয়া প্রতিকার আছে যা বিড়ালের পেট খারাপে সাহায্য করতে পারে যেমন: আদা (সামান্য আদা কুচি করে বা আদার রস করে খাওয়ালে বমি ভাব কমে) ক্যামোমিল চা (ক্যামোমিল চা পেটের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে) ঠান্ডা ক্যামোমিল চা অল্প পরিমাণে বিড়ালকে খাওয়াতে পারেন।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
বিড়ালের থাকার জায়গা এবং খাবারের পাত্র সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিয়মিত তার লিটার বক্স পরিষ্কার করুন, যাতে ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংক্রমণ না হয়।
কখন পশুচিকিৎসকের কাছে যাবেন?
কিছু লক্ষণ দেখলে দ্রুত Vet এর কাছে যাওয়া উচিত, সেগুলো হলো:
গুরুতর লক্ষণ | বর্ণনা |
Severe ডিহাইড্রেশন | যদি বিড়াল খুব দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। |
রক্তবমি বা পায়খানার সাথে রক্ত | বমি বা পায়খানার সাথে রক্ত গেলে তা গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। |
পেটে তীব্র ব্যথা | বিড়াল যদি পেটে ব্যথার কারণে খুব ছটফট করে। |
জ্বর | শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে। |
শ্বাসকষ্ট | শ্বাস নিতে কষ্ট হলে। |
দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা | পেট খারাপ যদি ২-৩ দিনের বেশি থাকে। |
বিভিন্ন রোগের কারণ ও ঠিক হতে করণীয়
বিড়ালের পেটে গ্যাস হলে করণীয়
বিড়ালের পেটে গ্যাস হওয়াটা খুবই অস্বস্তিকর একটা ব্যাপার। এর কারণে বিড়াল অস্থির হয়ে যেতে পারে। পেটে গ্যাস হওয়ার কিছু কারণ ও করণীয় নিচে আলোচনা করা হলো:
- কারণ
বিড়ালের পেটে গ্যাস কিছু খাবার, যেমন মটরশুঁটি বা শিম জাতীয় খাবার খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। অনেক সময় বিড়াল খুব দ্রুত খাবার খেলে পেটে বাতাস ঢুকে যায়, যা গ্যাসের সৃষ্টি করে। আবার খাবার হজম না হলে গ্যাস তৈরি হতে পারে।
- করণীয়
বিড়ালের পেটে গ্যাস তৈরি করে এমন খাবার দেওয়া বন্ধ করুন। সহজে হজম হয় এমন খাবার দিন। বিড়ালকে ধীরে ধীরে খাবার দিন, যাতে সে ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে পারে। তাছাড়া হালকা হাতে পেটে ম্যাসাজ করলে গ্যাস বের হতে সাহায্য করে। যদি গ্যাস সমস্যার সমাধান না হয়ে থাকে, তাহলে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বিড়ালের বাচ্চার পেট খারাপ হলে করণীয়
শুধু বড় বিড়াল নয়, বরং বিড়ালের বাচ্চার পেট খারাপ হওয়াটা খুব উদ্বেগের বিষয়, কারণ তারা খুব দ্রুত ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে করণীয় হলো:
- তাদের শরীরে যেন পানিশূন্যতা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে স্যালাইন দিন।
- পেট খারাপ হলে দ্রুত Vet এর কাছে নিয়ে যান। এবং পরামর্শ অনুযায়ী হালকা খাবার দিন।
- বিড়ালের বাচ্চার থাকার জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
বিড়ালের পাতলা পায়খানা হলে করণীয়
বিড়ালের পাতলা পায়খানা হওয়া খুব সাধারণ সমস্যা, তবে এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এর কারণ ও প্রতিকার আলোচনা করা হলো:
- কারণ
যদি হুট করে খাদ্যের পরিবর্তন ঘটে তখন অনেক সময় পাতলা পায়খানা হতে পারে। কিংবা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা পরজীবী সংক্রমণের মাধ্যমেও পাতলা পায়খানা হয়।
- করণীয়
বিড়ালের পাতলা পায়খানা হলে ২৪ ঘণ্টার জন্য খাবার বন্ধ রেখে দেখুন। তবে ডিহাইড্রেশন এড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করান। ২৪ ঘন্টা পর সেদ্ধ মুরগির মাংস বা ডিমের মতো হালকা খাবার দিন। তবে যদি ডায়রিয়া ২-৩ দিনের বেশি থাকে, তাহলে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বিঃদ্রঃ বিড়ালের পাতলা পায়খানা হলে নিজে থেকে কোনো ওষুধ দেবেন না। পশুচিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ দিলে তা বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিড়ালের পেটে ব্যথা হলে কিভাবে বুঝবো?
বিড়ালের পেটে ব্যথা হলে তারা কিছু বিশেষ লক্ষণ প্রকাশ করে। এই লক্ষণ গুলো দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার বিড়ালের পেটে ব্যথা হচ্ছে, লক্ষণ গুলো হলো:
- বিড়াল অস্থির হয়ে হাঁটাহাঁটি করতে পারে বা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুঁকড়ে বসে থাকতে পারে।
- পেটে হাত দিলে ব্যথা পেতে পারে এবং কামড়াতে বা আঁচড়াতে পারে।
- খাবার খেতে না চাওয়া বা খাবারে অনীহা।
- পেটে ব্যথার কারণে বিড়াল অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে বসতে বা দাঁড়াতে পারে।
- ব্যথার কারণে বিড়াল ডাকতে পারে বা গোঙাতে পারে।
যদি এই লক্ষণ গুলো দেখেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, বিড়ালের পেটে ব্যাখ্যা হয়েছে। এক্ষেত্রে দ্রুত Vet এর সাথে যোগাযোগ করুন।
বিড়ালের পেট ঠিক করার উপায় কি?
বিড়ালের পেট ঠিক রাখার জন্য বিড়ালকে একটি সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দিতে হবে। তাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দিন, যাতে হজম প্রক্রিয়া সঠিক থাকে। বিড়ালকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে উৎসাহিত করুন। কৃমি থেকে বাচিয়ে রাখতে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ দিন, যাতে পেটে কৃমি না হয়। সর্বপরি, বিড়ালের থাকার জায়গা এবং খাবারের পাত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
বিড়ালের ডায়রিয়া: কেন হয়, কি করা উচিৎ?
বিড়ালের পায়খানা ও ডায়রিয়া কেন হয়?
বিড়ালের পায়খানা ও ডায়রিয়া হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন হঠাৎ করে খাদ্য পরিবর্তন করলে ডায়রিয়া হতে পারে। আবার ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা পরজীবী সংক্রমণের কারণেও হতে পারে। কিছু খাবারের অ্যালার্জি থাকাও কারণ গুলোর মধ্যে একটি। কিংবা যদি বিষাক্ত কিছু খেয়ে ফেলে। বা অন্যান্য রোগ যেমন কিডনি রোগ, লিভারের সমস্যা, বা প্যানক্রিয়াটাইটিস ইত্যাদির কারণে বিড়ালের পায়খানা ও ডায়রিয়া হতে পারে।
বিড়ালের ডায়রিয়া ও বমি হলে কি করা উচিত?
যদি বিড়ালের ডায়রিয়া ও বমি হয় তবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারণ এটি ডিহাইড্রেশন এবং অন্যান্য জটিলতার কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে বিড়ালের বমি ও পাতলা পায়খানা হলে করণীয় হলো:
- ১২-২৪ ঘণ্টার জন্য খাবার বন্ধ রাখুন, তবে পানি সরবরাহ করুন।
- দ্রুত পশুচিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করুন।
- বিড়ালকে স্যালাইন বা ORS দিন, যাতে শরীরে লবণের ঘাটতি পূরণ হয়।
- বমি বন্ধ হলে ধীরে ধীরে সহজে হজমযোগ্য খাবার দিন।
বিড়ালছানার ডায়রিয়ার চিকিৎসা?
বিড়ালছানার ডায়রিয়ার চিকিৎসা বয়স্ক বিড়ালের চেয়ে আলাদা, কারণ তারা দ্রুত ডিহাইড্রেটেড হতে পরে। এক্ষেত্রে তাদের চিকিৎসা কিছুটা এমন হবে – বিড়ালছানাকে নিয়মিত স্যালাইন বা ORS দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আরেকটি প্রশ্ন আসে যে, বিড়ালকে কি নরমাল স্যালাইন দেওয়া যায়? উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ, বিড়ালকে নরমাল স্যালাইন দেওয়া যায়।
ডায়রিয়া বা বমির কারণে শরীরে পানিশূন্যতা হলে স্যালাইন খুব জরুরি। তবে বিড়ালকে স্যালাইন খাওয়ানোর নিয়ম হলো স্যালাইন ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে, যাতে বমি না হয়। সর্বপরি, বিড়ালছানার থাকার জায়গা এবং খাবারের পাত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন, যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়।
চূড়ান্ত মন্তব্য
বিড়ালের পেট খারাপ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এর সঠিক কারণ খুঁজে বের করে সঠিক চিকিৎসা করা জরুরি। আশা করি উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে বিড়ালের পেট খারাপ হলে করণীয় কি হবে সেটি জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত বিষয় গুলোর পেক্ষিতে উক্ত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন এবং বিড়ালটিকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।